ওসি-এএসপি’নিয়োগে আইজির সঙ্গে বিক্ষুব্ধ ওসি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাত

প্রকাশিত: ৩:২৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০১৬

ওসি-এএসপি’নিয়োগে আইজির সঙ্গে বিক্ষুব্ধ ওসি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাত

নিউ সিলেট ডেস্ক::::   সারাদেশের থানাগুলোতে অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) পদে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নিয়োগের সিদ্ধান্তে পুলিশের ইন্সপেক্টরদের (পরিদর্শক) মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হকের সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানায় কর্মরত ওসিদের একটি প্রতিনিধিদল আইজিপির সঙ্গে দেখা করেন।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও রাজধানীর গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক চকবাজার থানার ওসি শামীমুর রশীদ তালুকদার ও তেজগাঁও থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক চকবাজার থানার ওসি শামীমুর রশীদ তালুকদার বলেন, আমাদের প্রতিনিধি দল সাড়ে ১১টার দিকে আইজি মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এটা আমাদের ডিপার্টমেন্টাল বিষয়। একান্তই অভ্যন্তরীণ।
বৈঠকে কে কে ছিলেন এবং কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এলাকায় বিশেষ আদালত চলছে, তাই আমি থাকতে পারিনি।
বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আইজি মহোদয় প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন। যাতে থানার ওসি হিসেবে এএসপিদের পদায়ন না করে বর্তমানের মতো ইন্সপেক্টররাই দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
রাজধানীতে কর্মরত আরেকজন ওসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমি যাইনি। তবে আমাদের একটি প্রতিনিধিদল সাড়ে ১১টার দিকে আইজি মহোদয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি (আইজি) আমাদের প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেছেন। আমরা আশাবাদী আইজি মহোদয় তথা পুলিশ হেডকোয়ার্টার আমাদের দাবিকে অগ্রাহ্য করবে না। তারা আমাদের আবেদন আমলে নিবেন।
তিনি বলেন, যদি সরকার ইন্সপেক্টরদের অবহেলা করে তাহলে পুলিশ বিভাগে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন নিম্ন পদে কর্মকর্তা সদস্যদের মধ্যে শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। দায়িত্বের প্রতি আন্তরিকতা ও আগ্রহ কমে যাবে।
তেজগাঁও থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, সারাদেশে ইন্সপেক্টর ও তার নিম্ন বিভিন্ন পদে কনস্টেবলসহ ১ লাখ ৬৭ হাজার সদস্য কর্মরত আছেন। আর এএসপি আছেন ৩ থেকে ৪ হাজার।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করেন। তাদের জন্য যদি একটিও দায়িত্বশীল পদ না রাখা হয় তাহলে কষ্ট ও ত্যাগের মূল্যায়ন পাবেন না কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক জানান, তিনি এখন কথা বলতে পারবেন না।
জানা গেছে, এ নিয়ে শনিবার রাতে ডিএমপির সব থানার ওসিরা (ইন্সপেক্টর) নিজেদের মধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে মিটিং করেছেন। সেই মিটিংয়ের সিদ্ধান্তানুযায়ী আজ আইজিপির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন।
অনেক বছর ধরে থানায় ইন্সপেক্টর পদের কর্মকর্তারা প্রত্যেক থানায় একজন করে ওসির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১০ সালে প্রতিটি থানায় দু’জন করে ইন্সপেক্টর নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তার মধ্যে ঢাকা মহানগরের প্রতিটি থানায় তিনজন করে ইন্সপেক্টর দায়িত্ব পালন করছেন। এদের একজন অফিসার ইনচার্জ (ওসি), অন্য দু’জনের মধ্যে একজন ইন্সপেক্টর অপারেশন ও অন্যজন ইন্সপেক্টর তদন্ত হিসেবে কাজ করছেন।
একই বছর সিদ্ধান্ত হয়, দেশের সব থানায় (ওসি)পরিদর্শকদের বদলে সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) নিয়োগ করা হবে। এজন্য ঢাকা মহানগরের সব থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে এএসপিদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য মহানগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশও দেওয়া হয়। তবে পুলিশের নীতিনির্ধারণী গ্রুপে এ নিয়ে আলোচনা হলেও বাহিনীর ভেতরে বিষয়টি নিয়ে তখনই নানা প্রশ্ন ওঠে। পরে তা কার্যকর না হয়ে ঝুলে থাকে।
এখন ঐ নির্দেশনাটি কার্যকরের জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে নির্দেশ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।



This post has been seen 381 times.

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১