ট্রাম্পের জয়ে এশিয়ায় কী প্রভাব পড়বে

প্রকাশিত: ৯:৩৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৬, ২০১৬

ট্রাম্পের জয়ে এশিয়ায় কী প্রভাব পড়বে

নিউ সিলেট ডেস্ক ::::::: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ে এশিয়াজুড়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এ নিয়ে আতঙ্কিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর এশিয়ার অবস্থার বর্ণনায় এ কথা বলেছেন জাপানের টেম্পল ইউনিভার্সিটির এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক জেফ কিংসটন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে এশিয়ায় কী প্রভাব পড়বে? সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান ট্রাম্পের জয়ের পর থেকেই এটি এশিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। চীন, জাপান থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট দেশ ও অঞ্চলের নেতারা জানতে চান, নির্বাচনী প্রচারের সময়ে ঘোষিত অঙ্গীকারগুলো ট্রাম্প বাস্তবায়ন করবেন কি না? এগুলো বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের জোটে ভাঙন ধরবে, প্রভাব পড়বে রাজনৈতিক মানচিত্রে, সর্বাত্মক সংঘাতের আশঙ্কাও আছে।
জাপান
যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে গভীর পরিবর্তনের বিষয়টি দ্রুতই বুঝতে পেরেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এশিয়ার নেতাদের মধ্যেই তাই সর্বপ্রথম ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন তিনি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
জেফ কিংসটনের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক চাচ্ছেন শিনজো আবে। চলতি বছর কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার এই হুমকি মোকাবিলায় ট্রাম্পের পরিকল্পনা কী তাই জানতে চান শিনজো আবে।
নির্বাচনী প্রচারের সময়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগ নিচ্ছে এর অন্যতম দুই মিত্র জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। ট্রাম্প এমনও বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে রক্ষা পেতে পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহ উচিত জাপানের। এ ছাড়া উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ নিয়েও কথা বলেছেন ট্রাম্প।
চীন
নির্বাচনী প্রচারণায় বরাবরই চীনের প্রতি বিষোদগার করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে নির্বাচনের সময়কার কথা ও কাজের মধ্যে পার্থক্য থাকবে বলেই আশা করে চীনের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
চীনের ফুডান ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের ডিন শেন ডিংলির মতে, বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দুই দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্কই থাকবে। বাণিজ্য নিয়ে যুদ্ধ অচিন্তনীয়। তিনি বলেন, ট্রাম্প বুদ্ধিমান লোক। প্রচারণায় সময় তিনি ভোটার টানার জন্য কথা বলেছেন। তিনি ক্ষমতায় গেলে বুদ্ধিমানের মতোই আচরণ করবেন এবং পুনর্নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করবেন।
শেন ডিংলির মতে, ট্রাম্পের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকবে দেশের বিষয়গুলো। দক্ষিণ চীন সাগরের মতো বিষয়গুলো ঘাটাবেন না ট্রাম্প। এশিয়াবিষয়ক নীতির কারণে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা চীনে মোটেই জনপ্রিয় হননি।
দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার খারাপ সময়ে ক্ষমতায় এসেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট পার্ক জিয়ুন-হেইয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করছে দক্ষিণ কোরীয়রা।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের ইয়োনসেই ইউনিভার্সিটির এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক জন ডেলারি বলেন, দ্রুত ট্রাম্পে সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে নেতৃত্বশূন্য। ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের মতো কোনো মানুষই নেই।
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দেশটিতে সাড়ে ২৮ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনো সংঘাতে দক্ষিণ কোরীয়দের পাশে থাকবে তাঁরা। এ ছাড়া এই দক্ষিণ কোরিয়াতেই টিএইচএএডি ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে।
ফিলিপাইন
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টে রডরিগো দুয়ার্তের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না। ওবামা গালি দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষাণা দিয়েছিলেন দুয়ার্তে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে ভালো সম্পর্কই আশা করছেন রডরিগো দুয়ার্তে। মাদকের বিরুদ্ধে তাঁর বিতর্কিত যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কোনো হস্তক্ষেপ করবে না বলেই মনে করেন তিনি।
পাকিস্তান
ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন সময়ে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন যখন কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে সংঘা চলছে পাকিস্তানের। ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী।
ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের কাছে গত মাসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে তাঁর আগ্রহের কথা বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এখনো পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে নিজের কোনো পরিকল্পনা কথা বলেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পাকিস্তানের শিক্ষাবিষয়ক সংগঠন আলী আয়লানের এক বিশ্লেষক মোশাররফ জাইদি আশঙ্কা করেন, ট্রাম্পের আমলে ভারতে প্রাধান্য দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
ভারত
ভারতের জন্য নিজের ভালোবাসার কথা নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক মাস পূর্বের সাক্ষাৎকারে হিন্দুস্তন টাইমসকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তাঁর অনেক বন্ধু ভারত থেকে এসেছে।
রাজনীতিবিষয়ক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাটের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার মিত্রদের প্রতি আশ্বাসস্বরূপ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের অগ্রগতি ঠেকাতে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতোই লাভবান হবে ভারত। ভারতের নৌবাহিনীর উন্নয়নেও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা আসতে পারে।
তবে অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্পের নীতির কারণ ভারতীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ভারতের তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।16/11/16-ntb/ns/-



This post has been seen 501 times.

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১