আমরা দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব : শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ১০:২৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০১৭

আমরা দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব : শেখ হাসিনা

নিউ সিলেট ডেস্ক :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে নতুন সূর্য উঠেছে, এই সূর্যই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা বলেন, এতক্ষণ মেঘে ছেয়েছিল, আজকে আমাদের সূর্য নতুনভাবে দেখা দিয়েছে। এই সূর্যই আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে আবারও আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব প্রামাণ্য ঐহিত্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় এই সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। সব বক্তাই ৭ মার্চের ভাষণের নানা দিক উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতার সংগ্রামের নির্দেশনা ওই সমাবেশ থেকেই পেয়েছিলেন তারা।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ৭ মার্চের ভাষণের কথা এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাষণটিকে ‘নিষিদ্ধ’ করে রাখার কথা উল্লেখ করে বলেন, ইতিহাস কখনও চাপিয়ে রাখা যায় না। এই ভাষণ যত মুছে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে, সেটা ততই জাগ্রত হয়েছে। সমাবেশে ইতিহাসের  প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা প্রমাণ হয়েছে যে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে এক সময় বাজেটের জন্য বিশ্বের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হতো, এখন তার সেটি করতে হয় না। বাজেটের ৯৮ শতাংশ এখন নিজের টাকায় দেয়া হচ্ছে। জাতির জনক বাংলাদেশের রাজনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মুক্তির যে পরিকল্পনা করেছিলেন, সেই পথেই এখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হবেই-আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হবে বলেও আবার জানান প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলেন, তাদেরকে পাকিস্তানের প্রেতাত্মা ও পদলেহনকারী বলে আখ্যা দেন। বলেন, তারাই বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে মুছে ফেলার চেষ্টা করে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে। এই শক্তি যেন আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে জন্য সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি গোটা দেশের মানুষের উল্লেখ করে যারা এই ভাষণ মুছি দিতে চেয়েছিল, তাদের এখন লজ্জা হয় কি না, তাও জিজ্ঞাসা করেন। ইউনেস্কোর স্বীকৃতিতে ইতিহাসের প্রতিশোধ হিসেবেও আখ্যা দেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের বহু আগেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। ১৯৬৯ সালে যুক্তরাজ্য সফরে গিয়েই বলেছিলেন, কীভাবে যুদ্ধ হবে, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ কীভাবে হবে। এরপরও তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিনে জনগণের ম্যান্ডেট নেয়ার জন্য।
বিজয়ের পর সাড়ে তিন বছরেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত এবং কোনো রিজার্ভ ছাড়া দেশটিকে গড়ে তুলেছিলেন বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ৯ মাসের মধ্যে তিনি সংবিধান দিয়েছিলেন, নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিলেন। পৃথিবীর কোনো দেশ বিপ্লবের পর এত দ্রুত সংবিধান দিতে পারেনি।
সমাবেশে বিশিষ্টজনেরা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতার পরোক্ষ ঘোষণা হিসেবে বর্ণনা করেন। তারা বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাস চর্চার আহ্বান জানান। বলেন, এর মাধ্যমে নিজেকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা যাবে, দেশপ্রেমে নিজেকে উদ্বুদ্ধ করা যাবে।
শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, ২০১২ সাল থেকে ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ১৮ মিনিটের এ ভাষণ পড়াতে ছয়টি ক্লাস নিতে হয় আমাদের। এ ভাষণ বুকে ধারণ করলে কেউ আর বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে পেলার সাহস করবে না।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য সেই দিন আমরা খুব কাছ থেকে শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল। এ ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ভাষণ। ৭ মার্চের ভাষণে বাঙালির স্বাধীনতা ঘোষণা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সহপরিবারের হত্যা করেছিল বাঙালি নামধারী পাকিস্তানিরা। আজও তারা সক্রিয় আছে। তাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকতে হবে। ছদ্মবেশী পাকিস্তানিদের আর ক্ষমতায় যেতে দেয়া যাবে না।dt/ns/-



This post has been seen 249 times.

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১