কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার, স্থাপিত কারাগারের আদালতে যাননি খালেদার আইনজীবীরা

প্রকাশিত: ১২:০৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৮

কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার, স্থাপিত কারাগারের আদালতে যাননি খালেদার আইনজীবীরা

নিউ সিলেট ডেস্ক :  বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করতে পুরাতন ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের বসছে আদালত। বুধবার সকাল ১১টার দিকে কারাগারেই বসবে বিশেষ আদালত, শুরু হবে মামলার শুনানি।
খালেদার জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে কারাগারের আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কারাগারের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে আশপাশের দোকানপাটও। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসনকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়ার পর থেকে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি অন্য কোনো মামলায় আর হাজিরা দেননি। এমন পরিস্থিতিতে আদালতকেই কারাগারে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মঙ্গলবার গণমাধ্যম কর্মীদের জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। তিনি জানান, তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে গতকাল সন্ধ্যায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিভাগ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার সম্পন্ন করতে ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করে গেজেট প্রকাশ করে। মামলার কাজ পরিচালনার জন্য নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারের অফিসের একটি কক্ষ বিচারকাজ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

এদিকে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করতে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে যে আদালত বসানো হয়েছে সেখানে যাননি খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। তারা বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত আগের বিশেষ আদালতেই বসে আছেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জানান, সরকার আদালত স্থানান্তরের গেজেট প্রকাশ করেছে। কিন্তু বিষয়টি পূর্বে স্থাপিত আদালতেই জানাতে হবে। সেজন্য আমরা এখানে বসে আছি।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির এই মামলাটির বিচারকাজ পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। বয়স ও সামাজিক মর্যাদার কথা বিবেচনা করে আদালত তাকে এই দণ্ডাদেশ দেন। এরপর থেকে খালেদা জিয়া নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
কারাগারে নেয়ার পর থেকে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অন্য কোনো মামলায় আর হাজিরা দেননি বিএনপি প্রধান। এই পরিস্থিতিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করতে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত অস্থায়ী আদালত বসার ব্যাপারে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর আগে আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।
গেজেটে বলা হয়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ-সংক্রান্ত কার্যক্রম ঢাকা মহানগরের বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদরাসা ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালত ভবনে পরিচালিত হচ্ছে। এসব মামলার বিচার কার্যক্রম চলাকালীন এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে তাই নিরাপত্তাজনিত কারণে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের কক্ষটিকে অস্থায়ী আদালত ঘোষণা করা হয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যে আদালত দণ্ড দিয়েছেন, সেখানে আরও একটি মামলা শেষ পর্যায়ে আছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি আসামি জিয়াউল হক মুন্নার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়। পুরান ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের দিন নির্ধারণ করেন।
এই মামলায় এখন কেবল খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন বাকি। কিন্তু সাত মাসেও তার এই যুক্তি উপস্থাপন হয়নি। ফলে এই মামলার শুনানি কবে শেষ হবে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

 

 

 



This post has been seen 399 times.

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১