সিলেট ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:২৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
নিউ সিলেট ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার গিরিধারা আবাসিক এলাকায় বিসমিল্লাহ টুইনটাওয়ারের চারতলায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের চার জন নিহত হয়েছেন। গত ৬ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে মা-ছেলে ও মেয়েসহ চারজন মারা যান।অগ্নিদ্বগ্ধ হন আব্দুর রহিমের স্ত্রী ফাতেমা (৩৫) তার তিন সন্তান সাফওয়ান (৫), ফারিয়া (৯) ও রাফি (১১) গুরুতর আহত হন। তাদের শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে যায় বলে জানান (ঢামেক) হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের ডাক্তারা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সবশেষ ১২ এপ্রিল রাতে মারা যায় আব্দুর রহিমের কন্যা অগ্নিদ্বগ্ধ ফারিয়া (৯)। সে গিরিধারা ডি-লাইট স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। এর আগে ১০ এপ্রিল মারা গেছে পুত্র রাফি (১১)। সে ঐ স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। গত ৭ এপ্রিল রোববার রাতে অগ্নিদগ্ধ সাফওয়ান (৫) ও তার পরের দিন ৮ এপ্রিল আব্দুর রহিমের স্ত্রী অগ্নিদ্বগ্ধ ফতেমা আক্তার মারা যান। একসাথে স্ত্রী পুত্র কন্যা সন্তানসহ চারজনকে অকালে হারিয়ে পাগলপ্রায় ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম।
ফ্লাটের ম্যানেজার মো: বেলাল হোসেন, রাত আনুমানিক ৮টা। হঠাৎ বিকট শব্দ। কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়ে মানুষের আর্তনাদ। তাকিয়ে দেখি শিশু দুই বাচ্চাকে নিয়ে সিঁড়ি বেড়ে নিচে নামছেন অগ্নিদ্বগ্ধ ফাতেমা। তার শরীরে তখন আগুন। শরীর থেকে মাংস খসে পড়ছে। দুই শিশুর করুণ আর্তনাদ। লোকজন ছুটে এসে তাদের নিয়ে রওনা দেয় মেডিক্যালে দিকে। সিঁড়ি বেড়ে চার তলায় গিয়ে দেখি শরীরের বেশির ভাগ ঝলসানো রাফি (১১) পড়ে আছে ডাইনিং টেবিলের কাছে। তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মেডিক্যালের দিকে রওনা হই।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার গিরিধারা আবাসিক এলাকার সদ্য নির্মিত বিসমিল্লাহ টুইনটাওয়ারের ছয়তলা ভবনের চারতলার ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেন বেকারি ও মুদিমাল ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম। টাকা জমিয়ে সমিতির মাধ্যমে কয়েকজন মিলে জমি কিনেন আব্দুর রহিম। ওই জমিতে ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ এখনো চলছে। কয়েক মাস আগে আব্দুর রহিমসহ আরো ছয়জন তাদের তৈরি করা ফ্ল্যাটে পরিবার পরিজন নিয়ে উঠেন। স্ত্রী ফাতেমা এবং দুই পুত্র এক কন্যা সন্তান নিয়ে ঐ ভবনের ৪র্থ তলার নিজ ফ্ল্যাটে উঠেন ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম।
স্থানীয় বাসিন্দা সাব্বির হোসেন বলেন, চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে অগ্নিকাণ্ড দেখি। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে আসি। বাসার সিলিন্ডার লিকেজে আগুন ধরেছে।
মৃত্যুর আগে গুরুতর দগ্ধ ফাতেমা বলে গেছেন, ‘রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডারে লিকেজ ছিল আমরা পাশের ঘর থেকে গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছিলাম। হঠাৎ রান্নাঘরে বিস্ফোরণ হয়। গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর কিছু মনে নেই।
ফাতেমার স্বামী আবদুর রহিম জানান, তিনি একটি ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। পাশাপাশি ব্যবসা করেন। ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন না। তার মেয়ে ফারিয়া স্থানীয় ডিলাইট স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে এবং ছেলে রাফি পড়ে পঞ্চম শ্রেণীতে। অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে এতগুলো মৃত্যু মর্মান্তিক উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মজিবর বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, চারজনেরই শরীর মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছিল। তাদের চারজনের অবস্থাই গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ঢামেক বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, তাদের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল (ঢামেক) হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে রেখে আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি সুস্থ করে তোলার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা: সাইফুর রহমান জানান, ‘দগ্ধ চারজনের মধ্যে তিনজনের প্রায় ৯৫ শতাংশ এবং একজনের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। অবস্থা ছিল খুবই ক্রিটিক্যাল। রিকভার করা প্রায় অসম্ভব ছিল।
আব্দুর রহিমের এক নিকটাত্মীয় গতকাল জানান , অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে নিহত ফাতেমা ও তার সন্তানদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালিতে দাফন করা হয়েছে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
EDITOR & PUBLISHER:
JUMAN AHMED
OFFICE : 4/4 SURMA MARKET
SYLHET
EMAIL:newsylhet2016@gmail.com
WEB:www.sylheterkhobor.com
MOB:01712-298815
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি