৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সভায়
ফজিলাতুন্নেছা মুজিব দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:৪২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২০

<span style='color:#ff0000;font-size:20px;'>৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সভায় </span> <br/> ফজিলাতুন্নেছা মুজিব দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন: প্রধানমন্ত্রী

নিউ সিলেট ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন অসাধারণ বুদ্ধি, সাহস, মনোবল, সর্বসংহা ও দূরদর্শিতার অধিকারী। তিনি আমৃত্যু দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তিনি বলেন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর এবং বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের সহযোদ্ধা ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার (৮ আগস্ট) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুনন্নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার। অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার কর্মমুখর জীবনের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র পরিবেশন করা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বিশেষ করে আত্মত্যাগী, লাঞ্ছিত মা-বোনদের সহযোগিতা করা, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ ব্যক্তিগতভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সান্ত্বনা দেন এবং সামাজিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সর্বক্ষণের সহযোগী ও অনুপ্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকীতে ‘বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক’ প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে। যেখানে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার কর্মময় জীবনের প্রকৃত অর্থ প্রতিফলিত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতির পিতার সঙ্গে একই স্বপ্ন দেখতেন। এ দেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাক, ভালভাবে বাঁচুক এই প্রত্যাশা নিয়েই তিনি বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবসময় ছিলেন সজাগ এবং দূরদর্শী। তাই একজন সাধারণ বাঙালি নারীর মতো স্বামী-সংসার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের মহান সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পর দেশ পুনর্গঠনে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি কাজে আমার মাকেও দেখেছি বাবার পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। কখনো সংসারের কোনো সমস্যা নিয়ে বিরক্ত হননি। বরং বেশিরভাগ সময়ই তো আমার বাবা কারাগারে ছিলেন। একটানা দুই বছরও তিনি কারাগারের বাইরে থাকেননি। কিন্তু আমার মা যখন কারাগারে দেখা করতে যেতেন তখন মা নিজেই বলতেন চিন্তার কিছু নেই। সবকিছু তিনি নিজেই দেখতেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মানুষ করার দায়িত্ব আমার মায়ের হাতেই ছিল। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ প্রতিটি সংগঠনের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। নির্দেশনা দেয়া বা বাইরের অবস্থা জেলখানায় থাকা আব্বাকে জানানো, তার নির্দেশনা নিয়ে এসে সেগুলো পৌঁছে দেয়া। এই কাজগুলো তিনি খুব দক্ষতার সঙ্গে করতেন।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, কাজের জন্য আমার বাবা সকালে বাড়ি থেকে নাস্তা করে চলে আসতেন। আবার দুপুরে আমার মা নিজের হাতে রান্না করে টিফিন ক্যারিয়ারে করে পাঠিয়ে দিতেন। রান্নাটা সবসময় নিজের হাতে করতেন। তিনি যে প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী, পাক ঘরে গিয়ে রান্না করবেন, সেই সমস্ত চিন্তা তার কখনো ছিল না। এসময় তিনি বলেন, আমার মায়ের হাতের রান্না খুবই সুস্বাদু ছিল। ছেলে-মেয়েরা যেন বিলাসিতায় গা না ভাসিয়ে দেয় সেদিকে বঙ্গমাতা সবসময় সচেতন ছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি নিজে গণভবনে বা সরকারি বাসভবনে থাকেননি। না থাকার কারণটা হচ্ছে তিনি বলতেন, আমার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সরকারি বাসভবন বা শানশওকতে থাকব না। তারা বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হোক সেটা আমি চাই না। বিলাসিতায় আমরা যেন গা না ভাসাই সেটার ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। তিনি সবসময় আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তন এবং গোপালগঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন। তিনি ১০০ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ল্যাপটপ, দরিদ্র- অসহায় নারীদের মধ্যে ৩২শ’ সেলাই মেশিন এবং ১৩শ’ দরিদ্র নারীকে ‘নগদ’ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা করে দেন।
অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। এছাড়া গোপালগঞ্জ প্রান্তে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।



This post has been seen 360 times.

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১