সিলেট ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৫৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০১৬
নিউ সিলেট ডেস্ক::: বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনকারীদের যুক্তি খণ্ডন করে বেশ কিছু ভিডিও বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়। সরকারি টেলিভিশন বিটিভির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনেও এসব বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি অনলাইনেও বিশেষ করে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ফেইসবুক পেজে এসব ভিডিও আপলোড করা হয়েছে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় আশা করছে এসব বিজ্ঞাপন জনগণের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে উঠা প্রশ্নগুলোর জবাব দেবে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকলে সেটাও কেটে যাবে। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী সংগঠন তেল-গ্যাস ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বলেছেন, এসব বিজ্ঞাপন চালিয়ে জনগণকে পক্ষে টানা যাবে না।
বাগেরহাটের রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে বামপন্থি ও পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন এই কেন্দ্রের বিরোধিতায় নামে। গত কয়েক বছর ধরে তারা বলতে গেলে একতরফা প্রচার চালিয়েছে। শুরুর দিকে সরকার এগুলোর জবাব না দেয়ায় বেশ কিছু বিভ্রান্তি ও প্রশ্ন জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছে-এটা এখন বুঝতে পারছেন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ কারণেই এসব বিজ্ঞাপন বানানো হয়েছে বলে ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ফেইসবুক পেজে আপলোড করা একটি ভিডিওতে লেখা হয়েছে, ‘সুন্দরবনের এত কাছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কেন? আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি কী? রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে কয়লা ব্যবহার করা হবে, তা কী পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক? এই সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন ভিডিওগুলো থেকে। দেখে নিন ভিডিওগুলো আর নিজেকে বিভ্রান্তমুক্ত রাখুন আর অন্যকেও বিষয়টি নিয়ে ধারণা দিন।’
একটি বিজ্ঞাপনে দেখা যায় একজন বয়স্ক পুরুষ রামপালবিরোধী একটি পোস্টার নিয়ে ঘরে ঢুকছেন। এরপর তার ছেলে বাবাকে রামপালের পক্ষে নানা কথা বলেন। ওই যুবক বলেন, ‘সুন্দরবন নিয়ে এসব মিটিং-মিছিল, মানববন্ধন, শুধু শুধুই করছো বাবা। মোবাইল যখন আসলো তখন বললে ছেলেমেয়েরা সারাদিন প্রেম করবে, ইন্টারনেট আসার পর বললে পড়ালেখা রেখে সবাই গেম খেলবে। অথচ মোবাইল আর ইন্টারনেট লাইফটাই চেঞ্জ করে দিয়েছে।’
এরপর বাবা বলেন, ‘তাহলে তুই বলতে চাচ্ছিস, বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না?’
-‘অবশ্যই না’-জবাব দেন ছেলে।
‘তুই এতসব জানলি কীভাবে’-জানতে চান মা।
‘স্টাডি করে’- বলেন ছেলেটি, বলেন, ‘দরামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে- এটার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই’।
এই পর্যায়ে হাতে থাকা একটি ট্যাব থেকে কিছু গ্রাফিকাল উপস্থাপনা দেখিয়ে ছেলেটি বলেন, ‘দেখো রামপাল সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরের একটি বিরাণভূমি। বিদ্যুৎকেন্দ্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নতমানের কয়লা ব্যবহার করে ফ্লাইঅ্যাস ক্যাপচার করা হবে ৯৯.৯৯ শতাংশ। তাই সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।’
আরও জানতে চাইলে ওয়েবসাইট এ ভিজিট করার পরামর্শ দিয়ে ছেলেটি বলেন, ‘কনফিউশনে না থেকে কনফিডেন্ট থাকুন, দেশের অগ্রযাত্রায় অবদান রাখুন।’
এ ছাড়াও আরও কয়েকটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হচ্ছে ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পাশাপাশি টেলিভিশনেও প্রচার হচ্ছে আরও কিছু বিজ্ঞাপন। একটি বিজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে বাবা তার ছেলেকে নিয়ে গাড়িতে করে যাচ্ছেন। ছেলেটি রামপাল প্রকল্পবিরোধী একটি কর্মসূচির বিষয়ে তার বন্ধুদের নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন। এক পর্যায়ে বাবা তার ছেলেকে বলেন, কেন তার মনে হয়েছে সরকার এই দেশটাকে ভালোবাসে না। এক পর্যায়ে তিনি নিজেও একটি ট্যাব থেকে ভিডিও বের করে দেখান যে, সুন্দরবনের প্রান্তসীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে। এরপর নানা যুক্তি তুলে ধরে বাবা তার ছেলেকে বলেন, সব কিছু জেনে তারপর আন্দোলনে নামতে।
তবে এসব বিজ্ঞাপন প্রচার করে সরকার রামপালের পক্ষে জন সমর্থন নিতে পারবে না বলে মনে করছেন রামপাল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করা তেল-গ্যাস ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। ঢাকাটাইমসকে কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘যখন যুক্তির অভাব পরে তখনই বিজ্ঞাপনের দরকার পরে। যেটা বিভিন্ন পণ্যের বেলায় দেখা যায়। সরকার সত্য গোপন করে, শক্তি প্রয়োগ করে এই রামপাল বিদ্যুতকেন্দ্র করছে। বাংলাদেশের জনগণের টাকা খরচ করে, দেশের জনগণের জন্যই বিপদ টেনে আনা হচ্ছে।’
আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘জনগণের টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন বানানো হচ্ছে, বিশেষজ্ঞ ভাড়া করা হচ্ছে। তাদের পেছনে অঢেল টাকা খরচ করা হচ্ছে। এগুলো কিছুই দরকার পড়তো না যদি সরকার সচ্ছতার সঙ্গে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র করত।’ তার দাবি, সরকার তথ্য গোপন করে দেশের সর্বনাশ ডেকে আনছে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
EDITOR & PUBLISHER:
JUMAN AHMED
OFFICE : 4/4 SURMA MARKET
SYLHET
EMAIL:newsylhet2016@gmail.com
WEB:www.sylheterkhobor.com
MOB:01712-298815
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি