সিলেট ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৫২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
নিউ সিলেট ডেস্ক::: সন্তানদেরকে সব সময় সৎ থাকার তাগিদ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ছেলে মেয়েদের জন্য ধন-সম্পদ বা টাকা পয়সা রেখে যেতে পারবেন না- এই কথাটি বারবার বলেছেন তিনি।
গণভবনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে আওয়ামী লীগ সভাপতি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়ে-তাদেরকে একটা কথাই বলেছি, কোনো ধন সম্পদ, টাকা, পয়সা অর্থ করি করি তোমাদের জন্য করে রেখে যেতে পারবো না। একটা সম্পদ দিয়ে যাবো, সেটা হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষাটাই হবে তোমাদের মূল সম্পদ। তোমাদের যদি শিক্ষা থাকে, তোমরা করে খেয়ে যেতে পারবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদেরকে বলেছি ধার করে ঘি খাওয়ার থেকে সৎ পথে নুন ভাত খাওয়া অনেক মর্যাদার। এই কথাটা মনে রাখবে।’
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরকেও সৎ থাকার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। পরামর্শ দেন চোখ নিচের দিকে রেখে চলতে। তিনি বলেন, আমার বাবা আমাকে শিখিয়েছেন, নিচের দিকে তাকিয়ে চলতে হবে। এটার দুটি অর্থ আছে, চলার সময় যদি তুমি নিচের দিকে না তাকাও, তাহলে হোঁচট খাওয়ার সম্ভবানা থাকে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, কিছু মানুষ ধনী হয়, ধনী থেকে আরও ধনী হয়। আমাদের যদি দৃষ্টি এমন থাকে যে, ও সে এতো বড়লোক হলো, এতো বড় গাড়ি চালায়, আমি কেন পারলাম না-যেভাবেই হোক আমাকেও তা করতে হবে।’
‘অর্থাৎ তুমি যদি ওপরের দিকেই তাকাতে থাকো, ওপরের কিন্তু শেষ নাই, তোমার চারিত্রিক দুর্বলতাটাই প্রকাশ পাবে, দৃঢ়তাটা থাকবে না। তখন ওইভাবে চলার জন্য নিজে অসৎ পথে উপার্জনের পথ বেছে নেবে, যেটা কোনো মানুষের জন্য কখনও কল্যাণজনক না, মঙ্গলজনক না’-বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অসৎ পথে চলার পথ আমাদের না। আমাদেরকে চলতে হয়েছে আদর্শ নিয়ে, নীতি নিয়ে। যে আদর্শ আমাদেরকে শিখিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
পদ্মাসেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংক সরকারকে অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে আমাকেও অপবাদ দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। এই অপবাদ আমার পরিবারের জন্য না, আমার দেশের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম। বলেছিলাম, নিজের অর্থে আমরা পদ্মাসেতু বানাবো এবং সেটা করেছি।’
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদেরকেও সৎ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন রাজনীতিক নেতা হলে দেশের কথা আগে চিন্তা করতে হবে। দেশের মানুষের কথা আগে চিন্তা করতে হবে। নইলে মানসিক দৈন্যতা যেন পেয়ে না বসে।’ তিনি বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে, মনের শত্রু সবচেয়ে বড় শত্রু। মনই মানুষকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে, খারাপ পথে নিয়ে যায়। আমি চাই ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা ছেলে মেয়ে একটা আদর্শবান নেতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবে।’
তাঁতের শাড়ি পরি তাতীদের স্বার্থে
শেখ হাসিনা জানান, রাজনীতিতে আসার আগে কিছু দামী কাপড় পরলেও রাজনীতিতে নামার পর থেকে আর ওপথে যাননি। তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে নেমে ফ্রেঞ্চ শিফন পড়া শুরু করিনি। বরং শিফনগুলো বাক্সে রেখে দিয়েছিলাম। একেবারে খারাপ পরি না, যখন যেটা ভালো লাগে পরি, কিন্তু বিদেশি কাপড় না পড়লেই না, ইজ্জত থাকবে না, এই দুর্বলতায় আমি কখনও ভুগবো না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বরং আমার তাঁতীরা খুশি হয় কি না, তাদের খুশি করা যায় কি না, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা যায় কি না, সেই চিন্তাটাই আমি বেশি করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একবার শুনতে হয়েছে, ৯১ সালের নির্বাচনের পর বলা হয়েছে, আমি নাকি কাজের বুয়াদের শাড়ি পড়ি, তাই আমাকে ভোট দেয় না। পরে আমি ঠিক করেছিলাম, আমি ওই শাড়িই বেশি পড়বো। কিন্তু পরে দেখেছি, এতে ভোটের হেরফের হয় না।’
এখন আর হাত পাততে হয় না
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় ছিল বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে কাছে ভিক্ষা করে বেড়াতে হতো, হাত পাততো। খাবারের জন্য হাত পাততে হতো, উন্নয়নের জন্য হাত পাততে হতো। এখন আর বাংলাদেশকে হাত পাততে হবে না। আমরা এখন কাউকে দাতা বলি না, উন্নয়ন সহযোগী বলি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা ঋণ নেই, কিন্তু সুদসহ ফেরত দেই। কিন্তু আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াবো না কেন, পারবো না কেন, অবশ্যই পারবো। এটাই আমাদের চিন্তা।’
ভূমিহীনদের খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোথাও ভূমিহীন আছে কি না, বা কোনো মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাচ্ছে কি না, আমি তাদের নাম চাই। কেউ এই মাটিতে, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে একটি মানুষও না খেয়ে কষ্ট পাবে না, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে প্রত্যেকটা মানুষ তার মৌলিক অধিকার পাবে।’
ছাত্রলীগ কর্মীদের লেখাপড়া করার আহ্বান
সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লেখাপড়া শিখতে হবে, নিজেকে সুশিক্ষিত করতে হবে। মানুষের মত মানুষ হতে হবে। দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। পরীক্ষার পর যে সময়টা হাতে থাকে, যার যার নিজের বাড়িতে গিয়ে খুঁজতে হবে কেউ নিরক্ষর আছে কি না, এরপর তাকে অক্ষর জ্ঞান দিতে হবে।’
‘তোমরা প্রতিটি স্কুল বা কলেজে সংগঠন করবে, শিক্ষার্থীদের সমস্যা আছে কি না দেখবে, স্কুল কলেজ ঠিকমত চলে কি না সেটাও দেখবে’-বলেন শেখ হাসিনা।
কেউ জঙ্গিবাদী বা মাদকাসক্ত হলো কি না-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সে দিকেও নজর রাখার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
EDITOR & PUBLISHER:
JUMAN AHMED
OFFICE : 4/4 SURMA MARKET
SYLHET
EMAIL:newsylhet2016@gmail.com
WEB:www.sylheterkhobor.com
MOB:01712-298815
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি