সিলেট ২৭শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৩২ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০১৮
নিউ সিলেট ডেস্ক : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার রিয়াজ উদ্দিন ফকিরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করেন। তার বিরুদ্ধে আনা চারটি অভিযোগের মধ্যে চারটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়। এরমধ্যে দুইটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং দুইটি অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ২১ মার্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর ছিলেন ঋষিকেশ সাহা। আর আসামিপক্ষে ছিলেন সৈয়দ মিজানুর রহমান ও মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন।
আসামির বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ চারটি
এক. একাত্তরের ২২ আগস্ট সকাল ১০টায় রিয়াজ উদ্দিন বেশ কয়েকজন রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে ফুলবাড়িয়া সদরের আব্দুল মজিদকে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আটক ও নির্যাতন চালায়। একইদিন দুপুর ১টায় শহীদুল্লাহ মাস্টার, জামসেদ আলী এবং অপরিচিত আরও কয়েকজনকে আটক করে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন চালায়। ২৫ আগস্ট আব্দুল মজিদ,শহীদুল্লাহ মাস্টার,জামসেদ আলী এবং অপরিচিত আরও দুজনকে গুলি করে হত্যা করে স্থানীয় নদীতে লাশ ফেলে দেয়।
দুই. একাত্তরের ৫ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে রিয়াজ উদ্দিন ফকির রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া পুলিশ স্টেশনের ঋষিপাড়া গ্রাম থেকে বাসন্তি ঋষি, গীতা রানী ঋষি ও নির্মলা ঋষিকে তুলে নেয়। পরে তাদেরকে পাকিস্তানি সেনারা ধর্ষণ করে। এরপর গণেন ঋষি, রিফাত ঋষি, গগণ ঋষি, কালু ঋষি, মঙ্গলা ঋষি, দীনেশ ঋষি, উমেশ ঋষি এবং মহিন্দর ঋষিকে গুলি করে স্থানীয় নদীতে তাদের লাশ ফেলে দেওয়া হয়।
তিন. একাত্তরের ১৩ নভেম্বর দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় আল বদর কমান্ডার রিয়াজ উদ্দিন ফকির সশস্ত্র রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে আছিম বাজারে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে এবং নির্যাতন চালায়। এছাড়াও সেখান থেকে ১৩ জনকে ধরে নিয়ে গুলি করে আখালিয়া নদীতে তাদের লাশ ভাসিয়ে দেয়। তবে এ ঘটনায় সবমিলিয়ে ৪৩ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু ঘটে।
চার. একাত্তরের ২১ নভেম্বর সকাল ৯টার দিকে রিয়াজ উদ্দিন রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে ভালুকজান গ্রাম থেকে আলতাফ আলী মণ্ডল, তালেব আলী মণ্ডল, সেকেন্দার আলী মণ্ডল এবং লাল মাহমুদ মণ্ডলকে তাদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালায়। পরে লাল মাহমুদ মণ্ডলকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং অন্য তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর তদন্ত কাজ শুরু হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন আতাউর রহমান। ২০১৫ সালের ১১ আগস্টে আসামিকে গ্রেপ্তার করে একই বছরের ১২ অক্টোবর আসামিকে কারাগারের পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়। পরে একই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামি রিয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। এরপর ২৩ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। পরে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলার উভয়পক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থান করে। পরে গত ২১ মার্চ মামলাটি যেকোনো দিন রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। গত ৯ মে মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য রেখেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
প্রসঙ্গত, মামলাটির প্রথম দিকে তিনজন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে আমজাদ আলী গ্রেপ্তারের পর মারা যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। আর অভিযোগ গঠনের আগে পলাতক আসামি ওয়াজ উদ্দিন মারা যাওয়ায় তাকেও অভিযোগ থেকে বাদ দেওয়া হয়। আসামি রিয়াজ উদ্দিন ফকির গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।dt/ns/-
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
EDITOR & PUBLISHER:
JUMAN AHMED
OFFICE : 4/4 SURMA MARKET
SYLHET
EMAIL:newsylhet2016@gmail.com
WEB:www.sylheterkhobor.com
MOB:01712-298815
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি