সাইবার স্পেসে অনেক সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা হয় : থেরেসা মে

প্রকাশিত: ৪:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ৫, ২০১৭

সাইবার স্পেসে অনেক সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা হয় : থেরেসা মে

নিউ সিলেট ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে হামলার পর বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে জঙ্গি ইসলামী মতাদর্শ প্রচারের অভিযোগ এনেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। সাইবার স্পেসে অনেক সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা হয়, এমন অভিযোগ তুলে মে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক চুক্তি থাকা প্রয়োজন। অভিযোগ মেনে নিয়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল জানায়, এ সমস্যা নিরসনে কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই কয়েকশ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক দাবি করে, তাদের সাইটে কোন ধরনের সন্ত্রাসী প্রচারণা নজরে পড়া মাত্র তাৎক্ষনিকভাবে তা নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে মুছে দিতে অক্লান্তভাবে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায় তাদের জন্য ওয়েবসাইটটিকে তারা কঠিন একটি জায়াগায় পরিণত করতে চায়। বিশ্বের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগই একমত যে, মেসেজিং অ্যাল্পিকেশনগুলোর অ্যানক্রিপশনকে দুর্বল করার যে প্রস্তাব নিরাপত্তা সংস্থাগুলো দিয়েছে, তাতে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। তবে, ঠিক এ কারণেই সন্ত্রাসী অনেক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা নিরাপদে এবং গোপনীয়তার সঙ্গে করা যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। শনিবার রাতে লন্ডন ব্রিজ ও বারো মার্কেটে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে মে বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সবাইকে একত্রিত হবার এখনই সময়। উগ্রপন্থাকে অতিরিক্ত সহ্য করা হচ্ছে এদেশে, তা বন্ধ করতে হবে। যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়। শত্রু মোকাবেলার জন্য এখনই সময়। শনিবার রাতের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত জনে। আহত অন্তত ৪৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ব্রিটেনে গত তিন মাসেরও কম সময়ে এটি তৃতীয় সন্ত্রাসী হামলা। প্রথম হামলাটি হয় মার্চ মাসে ওয়েস্ট মিনস্টার ব্রিজে। দুই সপ্তাহ আগে ম্যানচেস্টার এরিয়ানায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। আর গতকাল লন্ডনের কেন্দ্রস্থলেই হলো আরো একটি হামলা।
থেরেসা মে বলেন, এ হামলাগুলোতে সন্ত্রাসীদের যে পরিকল্পনা তা দেখে মনে হচ্ছে এসব হামলা পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত নয়। কিন্তু সন্ত্রাসী হামলার নতুন নতুন ধরণ দেখছি আমরা। আর সন্ত্রাসী হামলা তো সন্ত্রাসী হামলাই। তারা কখনো একে অন্যের কাজ অনুকরণ করছে। আবার কখনো সবচেয়ে হিংস্র আর ভয়াবহভাবে আক্রমণ করছে। সন্ত্রাসীরা যেভাবে কাজ করছে যেভাবে হামলা চালাচ্ছে তা ব্রিটেন যথেষ্ট সহ্য করেছে, আর নয়।
সন্ত্রাসী হামলা নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মে বলেন, ব্রিটেনের মূল্যবোধ বজায় রেখেই চলতে হবে কিন্তু যখন চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের বিষয় আসবে তখন কিছু বিষয় পরিবর্তনের কথা ভাবতে হবে।
নির্বাচনের চারদিন আগে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে হামলার ঘটনায় গতকাল রবিবার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ রেখেছে রাজনৈতিক দলগুলো। আজ সোমবার থেকে আবার শুরু হচ্ছে প্রচারণা।
ইসলামী চরমপন্থা প্রতিরোধে চারটি প্রস্তাবনার কথা জানিয়ে মে বলেন, প্রথমত সাম্প্রতিক হামলাগুলো কোনো একটি নেটওয়ার্কে সম্পৃক্ত নয়, তারা একটি সাধারণ ধারণার অনুসারী। এককভাবে ধ্বংসাত্বক ইসলামী চরমপন্থাকে লালন করে এরা। তারা বলতে চায় স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পাশ্চাত্য ধ্যানধারণা ইসলামের ধ্যানধারণার পরিপন্থী। এই ধারণা প্রতিরোধ করাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সেটা শুধু সামরিক শাসন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে সম্ভব। দ্বিতীয়ত উগ্রপন্থার এসব ধ্যানধারণা যেন আরো ছড়িয়ে না যায়, তারা যেন কোন জায়গা না পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ইন্টারনেটনির্ভর সেবাগুলো নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে একত্রে কাজ করতে হবে। ইন্টারনেটে তারা উগ্রপন্থী কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করে। এগুলো রুখতে আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে হবে যেখান থেকে এসব নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তৃতীয়ত, এসব চরপন্থীদের শুধুমাত্র অনলাইনে বাধা দিলেই হবে না। বাস্তব জীবনেও এসব চরমপন্থীদের নিরাপদ স্থান রয়েছে সেগুলো ধ্বংস করতে হবে। সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের অবস্থান নির্মূলে সামরিক অভিযান হচ্ছে। সে ধরনের অভিযান এখানেও হতে হবে। সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বিবেচনায় ব্রিটেনে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে। তবে ম্যানচেস্টারে বোমা হামলার পর যে মাত্রায় সতর্কতা জারি ছিল এবার সেই মাত্রায় জারি হয়নি।dt/ns/-



This post has been seen 311 times.

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮