সিলেট ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৫ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:২১ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০১৭
নিউ সিলেট ডেস্ক : সিনেটে আইনপ্রণেতাদের সামনে বৃহস্পতিবার সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কমির সাক্ষ্য দেয়ার কথা। ট্রাম্পের হাতে বরখাস্ত এই এফবিআই প্রধান তার আগেই সিনেটে লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছেন। এতে কমি শুধু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারকাজে বাধা বা চাপ সৃষ্টির অভিযোগই আনেননি, একেবারে ঘটনার দিন-তারিখ, সেই সময়ের পরিবেশ সব কিছু খোলাসা করে বলা চলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর স্টিম রোলার চালিয়েছেন।
এই শুনানি-ই জনসমক্ষে এসেছে বৃহস্পতিবার। এখন সিনেটররা নানাভাবে কমিকে প্রশ্ন করে ঘটনার আরো বিস্তারিত জানতে চাইবেন। সেই সময় এই লিখিত কথাগুলো জেমস কমির মুখ থেকে বের হলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারকাজে বাধা প্রধানের জন্য অভিসংশন প্রক্রিয়াটা শুরু হওয়া সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে বলেই বলছে গণমাধ্যম বিশ্লেষণগুলো।
সেটা হলে, একই প্রক্রিয়ায় বিচারক আর সিনেটরদের সামনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জবাবদিহিতা করতে হবে। তাতে সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়া গেলেই শেষ হবে ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্র আর বিশ্বশাসন করার স্বপ্ন।
সিএনএন বলছে, এতদিন যেগুলো ছিল মাত্র অনুমানভিত্তিক আলোচনা, কমির বিবৃতির পরে সেগুলোই এখন প্রামাণ্য দলিল। জেমস কমি তার ডায়েরিতে লিখে রাখা কথাগুলোকেই গুছিয়ে নোট আকারে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন।
যেখানে ট্রাম্প কিভাবে, কতভাবে তাকে তার নির্বাচনী টিমের সঙ্গে রাশিয়ার যোগসাজস প্রশ্নে সবচেয়ে সন্দেহের তালিকায় থাকা ব্যক্তি সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল ফ্লিনকে এফবিআই তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছিলেন।
জবাবে কমি কি বলেছিলেন এবং ট্রাম্প তাকে তার এফবিআই প্রধান পদে থাকার বিপরীতে বিশ্বস্ততা পরীক্ষা দিতে বলেছিলেন। বিব্রত জেমস কমি পরে রাষ্ট্রের আইনমন্ত্রী জেসফ সেশনসকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যেন ভবিষ্যতে তার আর কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক না হয়। তবে রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার দপ্তর বা ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিসের মাধ্যমে বৈঠক হলে ক্ষতি নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিসংশনের ফাঁদে ফেলার সবচেয়ে মোক্ষম অভিযোগ, বিচারকাজে বাধা প্রদানের নমুনা হিসেবে, ডিরেক্টর কমি যেসব তথ্য সিনেট শুনানির আগে লিখিতভাবে প্রকাশ করেছেন, তার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো, এই বছরে অর্থাৎ জানুয়ারি ২৭ তারিখে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে ডিনার হয়, সেটাতে আমি আমার পুরো পরিবার নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম, প্রেসিডেন্ট সেটাতে রাজি হননি। বলেছিলেন, অন্য কোনো সময়ে হতে পারে। ডিনারটি প্রেসিডেন্টের অনুরোধেই হয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম সেখানে হয়তো আরো অনেকেই আসবে। কিন্তু আমি গিয়ে দেখি সেখানে সুনসান নিরবতা, শুধু আমি আর প্রেসিডেন্ট। মাত্র দু’জন নেভি সদস্য খাবার পরিবেশন করছিল। তারা চলে যাবার পর প্রাথমিক আলাপের পর, প্রেসিডেন্ট আমার কাছে জানতে চাইলেন, আমি এফবিআই’র পদে থাকতে চাই কিনা! আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম তার এই প্রশ্ন শুনে। কেন না, এর আগে নিজে থেকে তিনি দু’বার বলেছিলেন- এফবিআই পদে থাকতে। আমি ব্রিবতবোধ কাটিয়ে উত্তর দিলাম, আমি আমার কাজ ভালোবাসি। হ্যাঁ, নিশ্চয়, আমি আমার পুরো দায়িত্বকাল অর্থাৎ ১০ বছর পূর্ণ করতে চাই, দেশের প্রয়োজনে। আমি ভাবতে শুরু করেছিলাম, সে (প্রেসিডেন্ট) হয়তো কিছু চাচ্ছে আমার কাছে। কিন্তু আমি যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছি বা করতে চাই সেখানে কোনো রাজনৈতিক দল আমাকে পছন্দ করার কথা না। আমি বললাম, দেখুন আমি কারো পক্ষে নই, আমি কোনো দলের নই। অল্প কিছুক্ষণ পরেই প্রেসিডেন্ট তার নিরবতা ভেঙে বলতে শুরু করলেন, আই ওয়ান্ট লয়ালিটি, আই এক্সপেক্ট লয়ালিটি বা আমি আমার আনুগত্য চাই, আমি আনুগত্য প্রত্যাশা করি। আমি এই কথা শুনে প্রচণ্ড ধাক্কা খেলাম কিন্তু কিছু বললাম না। চুপ করে থাকলাম।
কিছুক্ষণ পরে আমি উত্তর দিলাম, অতীতে অনেক প্রেসিডেন্টই তদন্ত বিভাগের স্বাধীনতার মর্যাদা প্রশ্নে সন্দিহান ছিলেন। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের বড় অর্জন যে, তদন্ত বিভাগ তার নীতি আর আদর্শ অনুযায়ী চলে এসেছে।
এই ডিনারের শেষের দিকে প্রেসিডেন্ট আমাকে বলেন, আমি আপনার সম্পর্কে অনেক ভালো ভালো কথা শুনেছি। জেফ সেশনসও (আইনমন্ত্রী) আপনাকে অনেক ভালো জানেন। প্রেসিডেন্ট আবার বললেন, আই ওয়ান্ট লয়ালিটি। আমি এবার উত্তর দিলাম, আপনি সব সময় আমার কাছ থেকে সততা পাবেন (অনেস্টি)।
প্রেসিডেন্ট উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, সততাপূর্ণ আনুগত্য। এরপরে যেটা তিনি যোগ করলেন, তা শোনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। তিনি বললেন, জেনারেল ফ্লিন (রাশিয়া কানেকশন সংক্রান্ত ক্লাসিফাইড তথ্য প্রকাশের পর বরখাস্ত হওয়া সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা প্রধান) একজন ভালো মানুষ, তাকে তুমি তোমার তদন্ত থেকে অব্যাহতি দিতে পার, সে একজন ভালো মানুষ। আমি মাথা নেড়ে উত্তর দিলাম, হ্যাঁ, সে ভালো মানুষ। তিনি আবার যোগ করলেন, হ্যাঁ, তাকে এফবিআই তদন্ত থেকে মুক্তি দেওয়া হোক, আমি এটা চাই। এই ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশ্নে এফবিআই প্রধান জেমস কমির তরফে প্রকাশিত লিখিত বিবৃতির প্রথম অংশ। বাকি নাটকের দৃশ্য দেখা যাবে বৃহস্পতিবার। এরপর নাটকটি কোন দিকে জমবে সেটাই এখন আলোচনার মূল বিষয়। তবে এই নাটক যে ট্রাম্পের ঘরে বড় আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কেন না, কমির নিজস্ব স্বীকারোক্তি এখন প্রকাশ পেলেও তিনি লিখেছেন, আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মিটিং শেষ করে আমার দপ্তরে যোগ দিয়ে সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। অর্থাৎ প্রয়োজন হলে আরো একাধিক এফবিআই কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেবেন এ বিষয়ে।
উল্লেখ্য, এফবিআই প্রধানকে অপসারণ, রাশিয়া সংশ্লিষ্টতা আর জেনারেল ফ্লিনকে এফবিআই তদন্ত থেকে মুক্তি দিকে বলা-সংক্রান্ত গুরুতর এই অপরাধ বিষয়ে এফবিআই তদন্ত হচ্ছে, আলাদা একটি তদন্ত কমিটি দিয়ে। সাবেক এফবিআই প্রধার রবাট মুলার যেটির তদন্ত করছেন। জেমস কমির এসব তথ্যের ভিত্তিকে একটি মাত্র বিষয় এখন গুরুত্ব পাবে যে, জেমস কমিকে বরখাস্ত, তার সঙ্গে বৈঠকে তদন্ত প্রক্রিয়া স্থগিত করতে বলার বিষয়টি সত্য কিনা। সেটি প্রমাণ করার আরো কিছুটা স্তর হয়তো পার হতে হবে। কিন্তু সাক্ষ্য দেয়ার পরেই যে, সে বিষয়ে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়ে যাবে সেটি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রোজেনস্টাইন, ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। সুতরাং এখন সময়ের অপেক্ষা।pb/ns/-
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ |
১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
EDITOR & PUBLISHER:
JUMAN AHMED
OFFICE : 4/4 SURMA MARKET
SYLHET
EMAIL:newsylhet2016@gmail.com
WEB:www.sylheterkhobor.com
MOB:01712-298815
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি