নিউ সিলেট ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলের সঙ্গে রুশ আইনজীবীর সাক্ষাতের সময় সাবেক এক সোভিয়েত গোয়েন্দা কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। রিনাত আখমেতশিন নামে রাশিয়ার এক লবিস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযান চলার সময় ট্রাম্প টাওয়ারে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ও রুশ আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিতস্কায়া’র মধ্যেকার বৈঠকে রিনাতও উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে আরো ছিলেন ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও বর্তমানে হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও তৎকালীন ট্রাম্প প্রচারণা শিবিরের প্রধান পল ম্যানাফোর্ট।
রিনাত বলেন, সত্যিকার অর্থে আমি কখনো ভাবিনি বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এর আগে ট্রাম্প জুনিয়র জানিয়েছিলেন যে, গোপন ওই বৈঠকে শুধু রাশিয়ান আইনজীবী ভেসেলনিতস্কায়া উপস্থিত ছিলেন। ২০১৬ সালের ৯ জুন ট্রাম্পের ছেলের ওই গোপন বৈঠকের খবরটি গত সপ্তাহে প্রকাশের পর থেকেই চলছে ব্যাপক তোলপাড়। সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটি ৩৯ বছর বয়সী ট্রাম্প জুনিয়রকে প্রকাশ্যে সাক্ষ্য দিতে বলেন। যদিও ট্রাম্প জুনিয়র বলেন, ওই বৈঠক কোনো বিষয়ই নয়। অন্যদিকে নিজের ছেলেকে নির্দোষ, স্বচ্ছ বলে বক্তব্য দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত বছরের ওই বৈঠকে ট্রাম্প জুনিয়রকে জানানো হয়েছিল যে, রুশ আইনজীবীর কাছে রাশিয়া সরকারের এমন কিছু তথ্য আছে যা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্বাচনে জিততে সাহায্য করতে পারে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ করেছিল কি না তা নিয়ে তদন্ত চলছে। বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রিনাত আখমেতশিন জানান, সোভিয়েত সেনাবাহিনীর কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে গুপ্তচরবৃত্তির কোনো প্রশিক্ষণ তাকে দেয়া হয়নি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন।২০০৯ সালে তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব পান কিন্তু রাশিয়ার নাগরিকত্বও তার রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টকে রিনাত জানিয়েছেন, ওই বৈঠকের শেষ মুহুর্তে ভেসেলনিতস্কায়ারকে সঙ্গ দিতে তিনি ট্রাম্প টাওয়ারে গিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে ওয়াশিংটন ডিসি-র খনি প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারন্যাশনাল মিনারেল রিসোর্সেস’ রিনাতের বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের অভিযোগে মামলা করে। অভিযোগে বলা হয়, ওই ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রচারাভিযান সংক্রান্ত ব্যক্তিগত রেকর্ড হ্যাক করেছে। রিনাতের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যক্তিগত গোয়েন্দাও ভাড়া করে খনি প্রতিষ্ঠানটি। যদিও রিনাত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে এপি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রেমলিন মুখপাত্র বলেছেন, এই ব্যক্তি সম্পর্কে কিছুই জানে না রুশ সরকার। রিনাত আরও জানান, রাশিয়ার আইনজীবী ভেসেলনিতস্কায়া ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটিতে অবৈধ অর্থ প্রবাহ সম্পর্কে ট্রাম্প জুনিয়রকে জানান। ডিএনসি কিভাবে অবৈধ অর্থ গ্রহণ করছে এটা খুব ভালো ইস্যু হতে পারে। ট্রাম্প জুনিয়র জানতে চান এ বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ আছে কি না, কিন্তু উত্তরে ভেসেলনিতস্কায়া বলেন, তার কাছে তেমন তথ্য নেই। ট্রাম্প শিবিরকে এ নিয়ে আরো গবেষণা করতে হবে। এরপর ট্রাম্প জুনিয়র কিছু জানার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। রিনাত দাবি করেন, তারা চাইছিলেন, বৈঠকটি যত দ্রুত সম্ভব শেষ হয়ে যাক। সত্যিকার অর্থে আমি কখনো ভাবিনি ওই বৈঠকের বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।dt/ns/-

This post has been seen 197 times.