ভারতকে চীনের যুদ্ধের হুমকি

প্রকাশিত: ১১:২২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০১৭

ভারতকে চীনের যুদ্ধের হুমকি

নিউ সিলেট ডেস্ক : ডোকা লা নিয়ে সিকিম সীমান্তে ভারত-চীনের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এর মধ্যেই চীন এবার হুঁশিয়ারি দিল ভারতকে। মঙ্গলবার চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে সিকিম সীমান্ত ডোকা লা এলাকাকে ব্যবহার করা উচিত নয়। অবিলম্বে সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করুক ভারত। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, এই সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারতের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা হলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু কাং সাংবাদিকদের বলেন, ডোকা লা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটছে। যা নিয়ে চীনে বসবাসকারী অনেক বিদেশি কূটনীতিক আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকার ফলে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। বিরোধের নিষ্পত্তি করে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রকল্প তৈরি করতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হওয়ার কথা বলে ভারত তাতে সহযোগিতা করছে না। চীন-ভারত সীমান্ত পারস্পরিক বোঝাপড়ার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু যা ঘটছে তাতে ধৈর্য রাখা সম্ভব হয়ে উঠছে না। আর এই ইস্যু নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক ফায়দা তোলা উচিত নয়। আশা করছি সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারত ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে।
ডোকা লার সংঘাতের পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছে চীন। গ্লোবাল টাইমস-এ ভারতকে সরাসরি যুদ্ধের হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, ভারত যদি সংঘাত বাড়িয়ে যায়, তা হলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) জুড়ে সর্বাত্মক সংঘাতের পরিস্থিতির সামনে পড়তে হবে তাদের। ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে চীন সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু চীন নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুদ্ধ করতে ভয় পায় না। বরং দীর্ঘমেয়াদে সংঘর্ষের জন্য চীন নিজেকে তৈরি করবে। চলতি মাসের শেষের দিকে ভারতের নিরাপত্তা পরিষদের পরামর্শদাতা অজিত ডোভাল ব্রিকস দেশগুলির নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেখানে এই সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুদ্ধের হুমকির মধ্যেও নয়াদিল্লি অবশ্য কূটনৈতিক পথেই সমাধানের আশা করছে। দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চীন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ডোকা লায় সমস্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছায়নি, যাতে ভারত চীনের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। তবে পরিস্থিতি ‘স্পর্শকাতর’ বলেই জানিয়েছেন তিনি।
জয়শঙ্কর আরো বলেন, চীন সব সময়ই সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে থাকে। যদিও এবার তারা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। ভারত ধীরে সুস্থে পদক্ষেপ নিতে চাইছে, জোর দিচ্ছে কূটনীতির পথে। সিকিম সীমান্তে ডোকা লায় ভারত ও চীনের সেনারা প্রায় এক মাস মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। ১৯৬২ সালের পরে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতে চীন জানিয়েছে, যতক্ষণ না ভারত সেনা সরাচ্ছে ততক্ষণ কূটনীতির পথে এগোনোর প্রশ্ন নেই।
ডোকা লার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করছে ভারতও। যুদ্ধের পরিস্থিতি নেই এমনটাই বোঝানো হচ্ছে। ভারতের দাবি, যা নিয়ে এত কিছু বলছে চীন, সেই এলাকাটি ভুটানের। নয়াদিল্লির মতে, ডোকা লায় চীন রাস্তা তৈরি করলে ২৩ কিমি ‘চিকেন নেক’-এর খুব কাছেই লালফৌজের উপস্থিতি ভারতের নিরাপত্তার জন্য বিরাট সমস্যা তৈরি করবে। কারণ, এই পথ দিয়েই দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগ রয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা n24/ns/-



This post has been seen 190 times.

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮