এমআইটির বৃত্তি জিতল বাংলাদেশি কিশোরী

প্রকাশিত: ১২:১০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০১৭

এমআইটির বৃত্তি জিতল বাংলাদেশি কিশোরী

নিউ সিলেট ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের দরিদ্রতম অঞ্চলে বসবাসকারী একজন বাংলাদেশি অভিবাসীর কিশোরী কন্যা কৃতিত্বের সাথে জায়গা করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমআইটিতে। একই শহর থেকে নীল আমস্ট্রং এর চন্দ্রবিজয়ের সঙ্গী বাজ আলড্রিনেরও স্থান হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। এরপরেই তাফসিয়া অর্জন করে নিলেন গৌরবের সে স্থান।
নিউহামের বাসিন্দা কিশোরী তাফসিয়া শিকদার বিশ্বখ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) শিক্ষা, বাসস্থান সুবিধা এবং শিক্ষা সহায়কের জন্য জিতে নিয়েছে ২ লাখ পাউন্ডের এক অর্থবৃত্তি। বাংলাদেশি অর্থমূল্যে যা প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা সমপরিমানের। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বের অন্যান্য সেরা শিক্ষার্থীদের সাথে প্রকৌশল বিভাগে উচ্চশিক্ষায় শানিত করবেন নিজের মেধাকে। এর আগে তিনি নিজ শহরের এক কলেজ থেকে সব বিষয়ে এ প্লাস নিয়ে কৃতিত্বের সাথে এ লেভেল পাস করেন।
এ সাফল্যপ্রাপ্তিতে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি জানাচ্ছেন, হাস্যকর শোনালেও বলতে চাই, আমার জন্য এটি যেন চন্দ্র বিজয়! এবং এটা জানতে পেরে আরো অবাক লাগছে এ জায়গা থেকে সেই ‘চন্দ্র বিজয়ে’ আমি হলাম দ্বিতীয়জন। এ বিপুল পরিমান অর্থ সহায়তায় তিনি উচ্চশিক্ষা অর্জন তো করবেনই, সেইসাথে নিজের পরিবারকেও দরিদ্রতম শহর থেকে উড়িয়ে নিয়ে আসবেন ম্যাসাচুসেটসের রাজধানী বোস্টনে। বর্তমানে তাফসিয়া নিউহ্যাম কলেজিয়েট সিক্সথ ফর্ম সেন্টারে অধ্যয়ন করছেন, এরাই এ অর্থবৃত্তির জন্য আবেদন ও সাক্ষাতকারের ব্যবস্থা করে দেন আরেক হার্ভাড ডিগ্রীধারীর সাথে। ঠিকঠাকমত আবেদন গ্রহণ হলে লন্ডনের এক কফি হাউসে বসে এমআইটির এক কর্মকর্তা তার সাক্ষাতকার নেন।
তিনি আরো বলেন, যারা সেখানে (এমআইটিতে) গিয়েছে তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। তারা সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সাথে জড়িত ছিলেন। তারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদেরকে দেখানো সবচেয়ে বড় প্রযুক্তির অগ্রগতির জন্য দায়ী। তাদের মত আমিও সে ভূমিকা রাখতে পারব। ১৮৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত এমআইটি বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে নতুন নতুন উদ্ভাবনে, প্রকৌশলবিদ্যায়, অনলাইন দুনিয়া বিস্তারে ও তাদের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তায় বড় ধরণের ভূমিকা রেখে আসছে। তাফসিয়ার মতে, এমআইটি উজ্জ্বল সব মেধাবী মানুষদের চায়, তো এটা কোন উল্লেখযোগ্য বিষয় না যে কোত্থেকে সে এসেছে। অতএব আমি চাই না মানুষ এটা চিন্তা করুক, তারা ধনী পরিবারের নয় বলে এ সাফল্য অর্জন করা তাদের পক্ষে হয়নি। এ ধরণের চিন্তা মানুষের স্বপ্নকে বাধাগ্রস্থ করে। মানুষ এটা চিন্তা করতে পারে না এ অসাধারণ সাফল্য তারাও অর্জন করতে পারে। আমি এটা বলতে চাই যে কেন মানুষ লন্ডনের একদম পশ্চিমের এ দরিদ্রতম এলাকা থেকে এমআইটির মত জায়গায় যেতে ইচ্ছা লালন করে না, কেন আমরা আমাদের স্বপ্নকে আরও বড় করতে চাই না। তাফসিয়ার এ সাফল্যের পিছনে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছেন কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর মহসিন ইসমাইল। তার সহযোগিতা ও পরামর্শেই এত দূর আসতে পেরেছেন বলে জানান তাসফিয়া। তাফসিয়ার বাবা মাহমুদ শিকদার একজন প্রযুক্তি সহযোগী কর্মী (৪৬), মা লাইলা সুলতানা (৪৩) স্কুলের মধ্যাহ্নভোজন তত্ত্বাবধানকারী। তিন ভাই সাইফ, ফাহিম ও ইউনুসকে নিয়েই ওয়েস্টহামের তিন বেডের একটা বাসায় হেসে খেলে বড় হয়ে ওঠেন তাফসিয়া। তার পরিবারের বার্ষিক অর্থ উপার্জন মাত্র ৩০ হাজারের চেয়েও কম হওয়ায় এ অর্থবৃত্তির জন্য আবেদন করতে পেরেছিলেন তাফসিয়া। ১৯৯০ সালে তার বড় ভাইয়ের জন্মের আগমুহুর্তে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্য পাড়ি দেন শিকদার পরিবার।pb/ns/-



This post has been seen 216 times.

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮