কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী

প্রকাশিত: ১:১৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০১৭

কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী

নিউ সিলেট ডেস্ক : পাঁচ বছর সহ–সভাপতি হিসেবে মায়ের অধীনে শিক্ষানবিশ থাকার পর রাহুল গান্ধী হতে চলেছেন কংগ্রেস সভাপতি। সোমবার বেলা ১১টার দিকে দলের শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে সভাপতি পদের জন্য নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেন রাহুল। দলের অন্য কোনও নেতা সভাপতি পদের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। অতএব মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে দলের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে রাহুল গান্ধীর নাম। ভারতের আজকাল পত্রিকার খবরে বলা হয়, সোনিয়া গান্ধীর পর তিনিই যে হবেন কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি তা স্থির হয়ে গিয়েছিল তার রাজনীতিতে পদার্পণের দিনেই। তাই অভূতপূর্ব খুশির কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবুও দীর্ঘদিন পর কংগ্রেস মহলে ছিল উৎসবের আমেজ।
সকাল থেকেই ভিড় জমেছিল আকবর রোড এবং সংলগ্ন অঞ্চলে। আর অফিসের ভিতর তখন হাজির কংগ্রেসের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতে নেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখা প্রায় সকলেই। কংগ্রেস অফিসে ঢুকে রাহুল প্রথমেই চলে যান তার নিজের ঘরে। ওই ঘরে ততক্ষণে পৌঁছে গেছেন মা সোনিয়া গান্ধীর ঘনিষ্ঠ দুই নেত্রী মহসিনা কিদোয়াই ও শীলা দীক্ষিত। রাহুল ঘরে ঢুকতেই তাকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানান মহসিনা। এরপর কমলনাথের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সেরে রাহুল নিজেই এগিয়ে যান শীলা দীক্ষিতের দিকে। দিল্লির এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ততক্ষণে রাহুলকে আশীর্বাদের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সেই হাত ধরেই রাহুল তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন এমন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পাশে থাকার জন্য। রাহল–শীলার কথার মধ্যেই ঢুকে পড়েন মনমোহন সিং। দূর থেকেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হাতজোড় করে নমস্কার জানান রাহুল। তারপর স্বাক্ষর করেন নিজের মনোনয়নপত্রে।
এআইসিসি–‌র সদর দপ্তরে আসার আগে সকালে রাহুল গিয়েছিলেন রাজঘাটে। মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে। সেখান থেকে শক্তিস্থলে ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধী এবং বীরভূমিতে পিতা রাজীব গান্ধীর সমাধিস্থলেও যান তিনি। সেখান থেকে সোজা যান মনমোহন সিংয়ের বাড়িতে। মনমোহনের বাড়িতে আধ ঘণটা কাটানোর পর রাহুলের পরবর্তী গন্তব্য ছিল রাজাজি মার্গ। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির বাড়ি। তাকে আশীর্বাদ করার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেন কংগ্রেসের হবু সভাপতি। প্রণব রাহুলের কপালে টিকা লাগিয়ে দেন। মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদও করেন। মিনিট ১৫ প্রণব এর বাড়িতে কাটিয়ে রাহুল সোজা চলে আসেন কংগ্রেসের সদর দপ্তরে। যতক্ষণ পর্যন্ত রাহুল কংগ্রেসে অফিসে ছিলেন, ততক্ষণ জনতা ঠায় বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল একবার কংগ্রেসের ভাবী সভাপতিকে চোখে দেখার আশায়। কিন্তু তাদের সেই আশা পূরণ হয়নি। দলের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নিয়মমাফিক দলের সেন্ট্রাল ইলেকশন অথরিটির প্রধান এস রামচন্দ্রনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। সেখানেই চলে দলের নেতাদের সঙ্গে রাহুলের শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব। সেই পর্ব ছিল যথেষ্টই দীর্ঘ। তারপর রাহুল চলে যান দশ নম্বর জনপথে।
তবে রাহুলের এই মনোনয়নপত্র পেশের দিনে কংগ্রেস অফিসে দলের প্রায় সব পরিচিত মুখই উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না সোনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। যদিও রাহুলের মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হিসেবে সোনিয়ার স্বাক্ষর রয়েছে।
দলের কেউ সোনিয়ার এই অনুপস্থিতির বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি না হলেও জানা গেছে অসুস্থতার কারণেই সোনিয়া আজ আকবর রোডে আসেননি। আর মাকে ছেড়ে প্রিয়াঙ্কাও আসেননি। ১০ নম্বর জনপথের খবর, বাইরে না এলেও আকবর রোডের প্রতি মুহূর্তের খবর রাখছিলেন সোনিয়া–প্রিয়াঙ্কা। আর জনপথের পাশের রাস্তা আকবর রোডে তখন চলছে কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে এক অঘোষিত প্রতিযোগিতা। কিন্তু দলীয় নেতা ও কর্মীদের প্রত্যাশামতো রাহুল কি সত্যি সত্যিই হয়ে উঠতে পারবেন আগামী দিনে কংগ্রেসের ‘মুশকিল আসান’‌?



This post has been seen 315 times.

সর্বশেষ শিরোনাম

অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১