সিলেট ২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৪৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
নিউ সিলট ডেস্ক : জেরুজালেমকে ইসরাইলি রাজধানী ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেইসঙ্গে তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হবে বলেও জানান মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য তথা ওই অঞ্চলে নতুন করে অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আজ বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক ভাষণে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করবেন। সেইসঙ্গে আস্তে আস্তে তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে নেওয়ার নির্দেশনা দেবেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাপী যখন নিন্দার ঝড় উঠেছে তখন ট্রাম্প এ ঘোষণা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই অবস্থানের কারণে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার শান্তি প্রক্রিয়া যেমন ব্যাহত হবে তেমনি ওই অঞ্চলে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে। তবে তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস সময় নিয়ে জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
খবরে বলা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্প ইতোমধ্যে ফিলিস্তিন, জর্ডান ও মিসরের সরকার প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মঙ্গলবার ফোন করে ট্রাম্প তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তিন দেশের নেতারাই ট্রাম্পকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বুধবার এ ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পকে বলেছেন, তার (ট্রাম্প) এ সিদ্ধান্তের পরিণতি হবে ভয়াবহ এবং এর ফলে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। সেইসঙ্গে অত্র অঞ্চল তথা বিশ্বের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হবে।
ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পর মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাভিল আবু রুদেইনা এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ট্রাম্পকে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত অত্র অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ওপর বিপজ্জনক প্রভাব ফেলবে। জর্ডানের রাজপ্রাসাদ থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ কথা জানানো হয়েছে।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসিও এ ব্যাপারে ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছেন, এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া উপেক্ষিত হবে। মিসর সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সকালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ট্রাম্প যদি দূতাবাস সরানোর উদ্যোগ নেন তাহলে তার দেশ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে।
প্রসঙ্গত, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে জেরুজালেম একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু। ১৯৬৭ সালে সিরিয়া, মিসর ও জর্ডানের সঙ্গে যুদ্ধের পর পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরাইল। তখন থেকেই তারা শহরটিকে নিজেদের রাজধানী করার কথা বলে আসছে।
অন্যদিকে, জেরুজালেম হবে ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী- এমন দাবি করে আসছে ফিলিস্তিনিরা।
ফিলিস্তিনিরা বলছেন, ওয়াশিংটন যদি দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করে তাহলে সেটি হবে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ইস্যু। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র যে তথাকথিত শান্তি প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করেছে তাকেও উপেক্ষা করা হবে।
তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ট্রাম্প। তিনি আশা করছেন তিনি (ট্রাম্প) তা করতে পারবেন। কিন্তু ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলন ইন্তিফাদার নেতা আলী আবুনিয়ামাহ আলজাজিরাকে বলেছেন, গত কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র যা করছে তার মধ্যে সততা নেই। আর ট্রাম্প শান্তি অর্জনের যে কথা বলছেন তা প্রচার ছাড়া কিছুই নয়।
তিনি বলেন, বরং আমেরিকান নীতির ক্ষেত্রে তারা অধিক সততার সঙ্গে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, যার অর্থ হলো- ইসরাইলের অবৈধ উপনিবেশ ও পূর্ব জেরুজালেমে বসতি স্থাপনকে বিনা শর্তে সমর্থন দেওয়া। মার্কিন নীতি এখানে বছরের পর বছর কার্যকর হয়েছে। আর ট্রাম্প সেটাকে একটু খোলাসা করে বলছেন।
এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফিলিস্তিনিদের একটি গ্রুপ বেথেলহেমে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের ছবি সম্বিলিত পোস্টার পুড়েছেন।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র মুক্তি আন্দোলন হামাস জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর ও জেরুজালেমকে ইহুদিদের (ইসরাইলি) রাজধানী ঘোষণার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ফিলিস্তিনিদের এ ব্যাপারে আগামী শুক্রবার প্রতিবাদ পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
পশ্চিমতীর কেন্দ্রীক ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ মুস্তাফা বারঘোতি সতর্ক করে বলেছেন, আরব বিশ্ব তথা মুসলমানরা এটিকে মেনে নেবে না। মঙ্গলবার তিনি আলজাজিরার প্রতিবেদককে বলেন, ফিলিস্তিনিরা প্রকাশ্যে এ প্রতিবাদ জানাবে এবং জনগণ অসিংস আন্দোলন করবে। আর সেটা আপনি আগামীকাল, তার পরের দিন কিংবা তার পরের দিন দেখতে পাবেন।
মার্কিন প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা হিলারি ম্যান লেভারেট বলেছেন, ট্রাম্পের এই প্রচেষ্টা হচ্ছে মূলত সমস্যা সৃষ্টির মাধ্যমে একটি সুযোগ তৈরি করা।
ট্রাম্পের জামাতা ও হোয়াইট হাউজের শীর্ষ উপদেষ্টা জারেড কুশনারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুশনার যদি সত্যিকার অর্থেই শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করে থাকেন তাহলে এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া ঠিক হবে না, যা জেরুজালেম সম্পর্কে আরো উত্তেজনা তৈরি করবে।pb/ns/-
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
EDITOR & PUBLISHER:
JUMAN AHMED
OFFICE : 4/4 SURMA MARKET
SYLHET
EMAIL:newsylhet2016@gmail.com
WEB:www.sylheterkhobor.com
MOB:01712-298815
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি